Blog

ডিএনএস (DNS) কী? এবং ডিএনএস কিভাবে কাজ করে ?

Purple Gaming Channel Live Streaming YouTube Thumbnail (2)
DNS Freelancing web devlopment

ডিএনএস (DNS) কী? এবং ডিএনএস কিভাবে কাজ করে ?

ডিএনএস (DNS) কী?

ডোমেইন নেম সিস্টেম (DNS) হলো ইন্টারনেটের ফোনবুক। মানুষ ডোমেইনের নামের মাধ্যমে অনলাইনে তথ্য অ্যাক্সেস করে, যেমন nytimes.com বা espn.com। ওয়েব ব্রাউজার ইন্টারনেট প্রোটোকল (আইপি) ঠিকানার মাধ্যমে যোগাযোগ করে।

এই DNS এর সাহায্যেই মূলত আপনার ব্রাউজার ডিটেক্ট করতে পারে যে আপনাকে ইন্টারনেটের ঠিক কোন ওয়েবসাইটে বা কোন সার্ভারে নিয়ে যেতে হবে। তবে ডিএনএস মূল কাজটি কী এবং কেন দরকার হয়? এই বিষয়েই আজকে আলোচনা করবো।

"ডিএনএস (DNS)"

আপনি যখন কোনো ওয়েবসাইট ভিজিট করেন, তখন অবশ্যই আপনাকে ব্রাউজারে ওয়েবসাইটটির URL বা সহজভাবে বললে, ওয়েবসাইটটির অ্যাড্রেস টাইপ করতে হয়। যেমন- google.com বা facebook.com. তবে আপনি যখন ব্রাউজারে ওয়েবসাইটটির অ্যাড্রেস টাইপ করেন এবং এন্টার প্রেস করেন, তখন কিন্তু আপনার ব্রাউজার বা আপনার ইন্টারনেট ওই URL টির সাহায্যে আপনার কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটটিকে খুঁজে বের করে না। ব্রাউজারকে মূলত আপনি যে ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে চাচ্ছেন সেই ওয়েবসাইটটির ইন্টারনেট আইপি অ্যাড্রেস সম্পর্কে জানা থাকা লাগে।

তাই আপনি যখন কোনো ওয়েবসাইটের অ্যাড্রেস লিখে এন্টার করেন, তখন আপনার ব্রাউজার মূলত ডিএনএসের কাছে রিকোয়েস্ট সেন্ড করে আপনার কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটটির আইপি অ্যাড্রেস পাওয়ার জন্য।  এই ডিএনএস রিকোয়েস্টটি মূলত প্রথমে যেখানে যায় তা হচ্ছে রিকারসিভ নেম সার্ভার (Recursive Name Server)। এই নেম সার্ভারটি সাধারণত আপনার আইএসপি অপারেট করে। তবে আপনাকে শুধুমাত্র আপনার আইএসপির সার্ভার ব্যবহার করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। আপনি পাবলিক নেম সার্ভারগুলোও ব্যবহার করতে পারেন যেগুলো বিভিন্ন অর্গানাইজেশন অপারেট করে থাকে। যেমন- গুগল পাবলিক DNS বা ক্লাউডফ্লেয়ার DNS ইত্যাদি।

"রিকারসিভ নেম সার্ভার"

এই পাবলিক নেম সার্ভার বা আপনার ইন্টারনেট আইএসপির নেম সার্ভারগুলো অধিকাংশ সময়ই আপনার কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটটির আইপি অ্যাড্রেস স্টোর করে রাখবে। কিন্তু অনেকসময় যদি ওয়েবসাইটটির আইপি অ্যাড্রেস স্টোর না করা থাকে, তখন মূলত এই রিকোয়েস্টটি চলে যায় আরেক জায়গায় যেটিকে বলা হয় রুট সার্ভার। এই ১৩ টি রুট সার্ভারগুলো সব টপ লেভেল ডোমেইনগুলোর (.com, .net, .org etc) আইপি অ্যাড্রেসের রেকর্ড রাখে।

এটা শুনে কম সংখ্যক সার্ভার মনে হলেও আসলে এই রুট সার্ভারগুলোর ডেটাবেস আপনি যা ভাবছেন, তার থেকেও অনেক অনেক বিশাল। এই রুট সার্ভারগুলো পৃথিবীজুড়ে ফিজিক্যাল ডেটা সেন্টার ব্যবহার করে যাতে এসব রিকোয়েস্টগুলো সবসময় ইনস্ট্যান্টলি সার্ভ করা যায় সবাইকে।

এরপর যখন আপনার কাঙ্ক্ষিত ডোমেইনের পেছনের আইপি অ্যাড্রেসটি পাওয়া যায়, তারপর আপনার রিকোয়েস্টটি হ্যান্ডওভার করা হয় আপনি যে টপ লেভেল ডোমেইনটি অ্যাক্সেস করতে চাচ্ছেন তার সার্ভারে (যে সার্ভারটি আইপি অ্যাড্রেসের সাহায্যে বের করা হয়েছে)। ধরুন আপনি facebook.com ডোমেইনটিতে ভিজিট করার রিকোয়েস্ট করলেন।

তখন এই রিকারসিভ নেম সার্ভারটি আপনার রিকোয়েস্টকে এই ইউআরএলটির ডোমেইন সার্ভারে পাঠাবে। এবং এখান থেকে আপনার কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটটির ডোমেইন যে নেমসার্ভারে পয়েন্ট করা আছে অর্থাৎ ওয়েবসাইটটির সকল ডেটা যে ক্লাউড সার্ভারে হোস্ট করা আছে সেই ক্লাউড সার্ভারটিতে আপনার রিকোয়েস্টটি সেন্ড করা হবে যাতে সেখান থেকে ওই ওয়েবসাইটটির সকল ডেটা আপনাকে সার্ভ করা হয়। এবং এরপরেই মূলত আপনি ওয়েবসাইটটি অ্যাক্সেস করতে পারেন।

"ডিএনএস ক্যাশিং"

সময় বাঁচানোর জন্যে আপনার কম্পিউটার এবং রিকারসিভ নেইম সার্ভার দুটিই এই ডিএনএস রিকুয়েস্টগুলোকে ক্যাশ করে রাখে বা সহজ ভাষায় বললে লোকালি আপনার ডিভাইসে জমা করে রাখে, যাতে আপনার ডিভাইস আগে থেকেই জানতে পারে যে আপনার ভিজিট করা ওয়েবসাইটগুলোর আইপি অ্যাড্রেস কী এবং পুনরায়  যখন আপনি ওই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে যাবেন তখন যেন আবার নতুন করে আইপি অ্যাড্রেস খুঁজতে না হয়।

ঠিক এই কারণে আপনি একটি ওয়েবসাইট একবার ভিজিট করার পরে যখন দ্বিতীয়বার আবার ভিজিট করতে যান, তখন আগের তুলনায় ওয়েবসাইটটি আরও তাড়াতাড়ি লোড হয়। এর কারণ হচ্ছে, এবার আগের মতো আপনার ব্রাউজারকে ওয়েবসাইটটির আইপি অ্যাড্রেস খুঁজে বের করতে হয়নি। কারণ, আপনার কম্পিউটার আগে থেকেই এই আইপি অ্যাড্রেসগুলো সেভ করে রেখেছে।
ডিএনএস অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোন সমস্যা ছাড়াই কাজ করে। তবে অনেকসময় যদি আপনার ভিজিট করা কোনো ওয়েবসাইট তাদের আইপি অ্যাড্রেস বা তাদের সার্ভার চেঞ্জ করে, তখন সমস্যা হতে পারে।
তখন ওয়েবসাইটটি অ্যাক্সেস করার সময় আপনার ব্রাউজার আপনাকে ৪০৪ এরর শো করতে পারে যতক্ষণ না পর্যন্ত এটি ডিএনএস রেকর্ডগুলো নতুন করে আপডেট করতে পারছে। তবে একটি সিম্পল সিএমডি কমান্ডের সাহায্যেই এটি ফিক্স করা সম্ভব। উইন্ডোজে কমান্ড প্রম্পট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর মোডে ওপেন করে >IP config / flush dns কমান্ডটি এন্টার করলেই আপনার ডিএনএস ক্যাশ ক্লিয়ার হয়ে যাবে।

" ডিএনএস স্পুফিং/ ডিএনএস ক্যাশ পয়জনিং"

এটি মূলত একটি হ্যাকিং মেথড যা হ্যাকাররা ব্যবহার করে আপনার ডিভাইসকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করার জন্য। ধরুন আপনি আপনার পিসিতে কোনোভাবে একধরনের ম্যালওয়্যার ঢুকিয়ে ফেললেন যেটি আপনার ডিএনএস ক্যাশকে টার্গেট করলো। এই ম্যালওয়্যারগুলো মূলত আপনার ডিএনএস ক্যাশ এডিট করে আপনার এসব সবসময় ভিজিট করা ওয়েবসাইটগুলোর আইপি অ্যাড্রেস চেঞ্জ করে তাদের ইচ্ছামতো কোনো ম্যালিশিয়াস ওয়েবসাইটের আইপি সেট করে দেবে।
যখন দেখবেন যে আপনার নিয়মিত ব্যবহার করা ওয়েবসাইট এ ভিজিট করার পর আপনাকে বার বার বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় সাইটে পাঠিয়ে দিচ্ছে তাহলে ধরে নিবেন আপনি এর শিকার।  তখন আপনার উচিত হবে যত দ্রুত সম্ভব একটি রিলায়েবল ম্যালওয়্যার স্ক্যানার ব্যবহার করে আপনার সম্পূর্ণ সিস্টেম স্ক্যান করা। যেমন- Malware bytes।
“তো এই ছিল ডিএনএস কী এবং কী কাজে লাগে” তার একটি সহজ ব্যাখ্যা। ডিএনএস জিনিসটি মূলত আমাদের ইন্টারনেটকে অনেকটা সহজ করেছে। নাহলে হয়তো আমাদেকে প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটে আইপি অ্যাড্রেস টাইপ করে করে অ্যাক্সেস করতে হতো। সেটা অনেকটা সম্পূর্ণ ফোন নাম্বার মনে রেখে এবং টাইপ করে কাউকে ফোন করার মতোই। আশা করছি আজকের ব্লগ টা আপনাদের অনেক কিছু জানতে সাহায্য করেছে । ধন্যবাদ সবাইকে😊
(Visited 227 times, 1 visits today)

Leave your thought here

Your email address will not be published. Required fields are marked *

WordPress Image Lightbox